ঘটে যেতে পারতো আরেকটি আবরার ফাহাদ হত্যার মতো ঘটনা।

রাজধানীর মিরপুরের তানযীমুল উম্মাহ মাদ্রাসায় মাত্র ৯ বছর বয়সী চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জমজম ইসলাম রিতুলকে সহপাঠীদের ভয়ঙ্কর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, অষ্টম শ্রেণির চার শিক্ষার্থী ২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে স্টিলের স্কেল ও ঝাড়ু দিয়ে মারধর করা হয়। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে শিশুটি সিঁড়িতে এক শিক্ষককে সাহায্যের জন্য ডাকলেও তিনি গুরুত্ব না দিয়ে চলে যান। দীর্ঘ নির্যাতনের পর ভয় পেয়ে অভিযুক্তরা তাকে গোসল করিয়ে নিজের রুমে ফিরিয়ে দেয়, যাতে তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন বোঝা না যায়। পরদিনও তানযীমুল উম্মাহ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, বরং পরিবারকে না জানিয়ে শিশুটিকে জোরপূর্বক রোজা ভেঙে ওষুধ খাওয়ানো হয়।
মাদ্রাসার ম্যানেজমেন্ট ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। শিশুটিকে ভয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের ফোন থেকে পরিবারকে কল করানো হয় এবং বলা হয়, সে প্রতিযোগিতার কারণে বাসায় আসতে পারবে না। তবে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে জমজম তার সহপাঠীর মাধ্যমে ভাইকে খবর পাঠানোর ব্যবস্থা করে। তার ভাই মাদ্রাসায় গিয়ে দেখেন, শিশুটি প্রচণ্ড ব্যথায় কাতরাচ্ছে। পরিবারের দাবি, পুরো ২৫ ঘণ্টায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ একবারও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা সরাসরি মাদ্রাসায় গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাইলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শুরুতে অস্বীকৃতি জানায়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান ফোনে জানান, তারা আসতে পারবেন না। একদিকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর অজুহাত দেখান, অন্যদিকে চেয়ারম্যান হজে যাচ্ছেন বলে জানান। তারা বলেন, "আমাদের সারা দেশে ১০৫টি শাখা আছে, একটা বন্ধ হলে কিছুই যায় আসে না।" এই উদাসীন মনোভাব ও দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত অভিযুক্তদের বিচার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
From: Collected, Tanjila Islam